সন্তান নিয়ে ইসলামিক উক্তি

সন্তান নিয়ে ইসলামিক উক্তি – প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদের জন্য শেয়ার করবো সন্তান নিয়ে ইসলামিক উক্তি ও বানী। আশাকরছি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। আর ভালো লাগলে আপনার শেয়ার করুন আপনার কাছের মানুষের সাথে। আমাদের সাথে থাকার জন্য আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ আপনাকে। চলুন শুরু করি।

 

সন্তান নিয়ে ইসলামিক উক্তি

 

সন্তান নিয়ে কোরআনের আয়াত

  • সন্তান-সন্ততি বান্দার প্রতি আল্লাহর উপহার। কারণ, সুসন্তান জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ। সন্তানকে মানবজীবনের সৌন্দর্য ও রূপ বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সম্পদ ও সন্তানাদি পবিত্র কোরআনে দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত : ৪৩)

 

সন্তান লাভের বিষয়টিকে মহান আল্লাহ ‘দান’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যাকে খুশি তিনি সন্তান দান করেন এবং যাকে খুশি পুত্রসন্তান দান করেন। যাকে খুশি কন্যা ও পুত্র উভয়টি দান করেন। আর যাকে ইচ্ছে বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশালী।’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত : ৪৯)

 

  • নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদ ও সন্তান ফিতনাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে উত্তম প্রতিদান।
    (সুরা তাগাবুন, আয়াত : ১৫)

 

সন্তান নিয়ে কোরআনের আয়াত

 

যারা বলে, হে আমাদের প্রভু! আমাদের চক্ষু শীতলকারী স্ত্রী ও সন্তান দান করুন। আমাদের আল্লাহভীরু মানুষের নেতা নির্বাচিত করুন।
(সুরা ফুরকান, আয়াত : ৭৪)

 

 

  • পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন লোকমান তাঁর ছেলেকে বলল—সে ছিল তার কল্যাণকামী।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ৩১)

 

‘আমি লোকমানকে প্রজ্ঞা দান করেছি।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১২)

 

  • ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। মা সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং তোমার মা-বাবার প্রতিও কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৪)

 

‘তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করো। নিশ্চয়ই সুরের মধ্যে গাধার সুরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৯)

 

  • আল্লাহ বলেন, ‘হে ছেলে! সালাত কায়েম করো, সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং অসৎ কাজে নিষেধ করো। এটাই তো দৃঢ়সংকল্পের কাজ।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৭)

 

‘প্রিয় পুত্র! ক্ষুদ্র বস্তুটি যদি সরিষা দানার পরিমাণও হয় এবং তা যদি থাকে শিলাগর্ভে বা আকাশে কিংবা মাটির নিচে আল্লাহ তাও উপস্থিত করবেন। আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৬)

 

  • ‘তোমার মা-বাবা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সঙ্গে শরিক করতে—যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তুমি তাদের আনুগত্য কোরো না। তবে পৃথিবীতে তাদের সঙ্গে বসবাস করবে সদ্ভাবে।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৫)

 

‘অহংকার বশে তুমি কাউকে অবজ্ঞা কোরো না এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ কোরো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো উদ্ধত অহংতারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৮)

 

  • ‘ইয়াকুবের কাছে যখন মৃত্যু এসেছিল, তখন কি তোমরা উপস্থিত ছিলে? সে যখন পুত্রদের জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘আমার পরে তোমরা কিসের ইবাদত করবে? তারা তখন বলেছিল, আমরা আপনার ইলাহের এবং আপনার পিতৃপুরুষ ইবরাহিম, ইসমাঈল ও ইসহাকের ইলাহের ইবাদত করব। তিনি একমাত্র ইলাহ এবং আমরা তাঁর কাছেই আত্মসমর্পণকারী।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৩৩)

‘হে পুত্র! আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই শিরক অনেক বড় জুলুম।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৩)

 

  • ‘আর আমি মানুষকে মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণ করার নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়া হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার ও তোমার মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করো। আমার কাছেই তো ফিরে আসবে।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৪)

 

‘হে পুত্র, যদি তা (পাপ-পুণ্য) হয় সরিষার দানার সমান এবং তা থাকে পাথরের ভেতর অথবা আসমান জমিনের যে কোনো স্থানে, আল্লাহ তা উপস্থিত করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী।’ (সুরা লোকমান, আয়াত ১৬)

 

  • লোকমান (আ.) তাঁর সন্তানকে বলেন, ‘হে পুত্র! নামাজ আদায় করো।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৭)

হে পুত্র!…সৎ কাজের আদেশ দাও এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করো।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৭)

 

  • ‘হে পুত্র!…তোমার ওপর আসা বিপদে ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয়ই এগুলো দৃঢ় সংকল্পের কাজ।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৭)

 

অহংকারবশত তুমি মানুষকে অবজ্ঞা কোরো না, পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ উদ্ধত, অহংকারীকে পছন্দ করেন না। চলাফেরায় তুমি সংযত হও এবং স্বর নিচু রাখো। নিশ্চয়ই আওয়াজের ভেতর গাধার আওয়াজই সবচেয়ে শ্রুতিকটু।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৮-১৯)

 

সন্তান নিয়ে হাদিস

 

  • সন্তানের জীবন চলার গতিপথ নির্ণয় করেন তার পিতা-মাতা। তাঁদের আচরণ-উচ্চারণ ও শিক্ষা-দীক্ষা সন্তানকে সুপথে পরিচালিত করে। অথবা বিপথে ধাবিত করে। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক নবজাতক সুস্থ প্রকৃতি (সুবোধ ও সত্য গ্রহণের যোগ্যতা) নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদি, অগ্নিপূজক ও খ্রিস্টানে পরিণত করে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

 

উত্তম শিক্ষা ও উপদেশ দান সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলার অন্যতম মাধ্যম। সন্তানের জন্য পিতা-মাতার সর্বোত্তম উপহার এটি। মহানবী (সা.) বলেন, ‘সন্তানকে দেওয়া পিতার সর্বোত্তম উপহার হলো শিষ্টাচার।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫২)

 

  • সাহাবিরাও সন্তানদের উপদেশ দিতেন। প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিতেন। ওমর (রা.) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে বলেন, ‘বড়রা যতক্ষণ কথা বলেন, তুমি কথা বলবে না।’ (মুস্তাদরিক আলাস সাহিহাইন, হাদিস : ১৫৯৯)

 

সুসন্তান শুধু পার্থিব জীবনের সম্পদ নয়। পরকালীন জীবনের জন্যও তারা হবে কল্যাণের বাহক। রাসুল (সা.) বলেন, যখন মানুষ মারা যায়, তিনটি বিষয় ছাড়া তার অন্য সব আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তা হলো সদকায়ে জারিয়াহ, এমন জ্ঞান মানুষ যার দ্বারা উপকৃত হয় এবং সুসন্তান যে তার জন্য দোয়া করে। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৩১)

 

পড়তে পারেন:-

Bangla Quote